দেশের গ্রাম-বাংলার অনেক ঐতিহ্য কালের পরিবর্তনে হারাতে বসলে ও জগন্নাথপুরের মুড়া শিল্প বাঁচিয়ে রেখেছে সেই ঐতিহ্যকে। মুড়া তৈরীর মাধ্যমে ৪টি গ্রামের প্রায় ২শতটি পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে এবং সৃষ্টি করেছেন অনেক বেকার লোকজনের কর্মসংস্থান। ১৯৭৯ সালের অকালবন্যায় জগন্নাথপুরের সব হাওরের ফসল তলিয়ে যায়। চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ইসমাইলচকসহ নলুয়ার হাওরপারের গ্রামগুলোতে দেখা দেয় অভাব-অনটন। এ সময় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গ্রামে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় গুলজার মিয়া নামের একজনের। এ ঘটনায় মামলা হলে জমশেদ উল্লাহ, ইরশাদ উল্লাহসহ কয়েকজন লোকের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। ঠাঁই হয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বাঁশ ও বেত দিয়ে মোড়া বানানোর কাজ শেখেন জমশেদ ও ইরশাদ। সাত বছর সাজা ভোগের পর গ্রামে এসে তাঁরা মোড়া বানানোর কাজ শুরু করেন। মুড়া তৈরী করে বেশি আয় হওয়ার কারণে মুড়া তৈরীর কাজ শিখার জন্য এলাকার লোকজন তাদের কাছে ছুটে আসে। ধীরে ধীরে একজন থেকে অন্যজন কাজ শিখে ফেলেন। পরে তাদের দেখাদেখি আরো আশপাশ ইসমাঈলচক, স্বজনশ্রী, স্বজশ্রী (নয়াপাড়া), বাউধন গ্রামের লোকজন ও মুড়া তৈরীর কাজ শিখে নেন। অবহেলিত এ অঞ্চলে বৈশাখ মৌসুম ছাড়া বছর তেমন একটা কাজ না থাকার সুযোগে মুড়া তৈরী করে এলাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। পরে জানাজানি হলে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ছুটে এসে মুড়া নিয়ে বিভিন্ন কুঠির শিল্পমেলায় বিক্রি করতে থাকেন। এভাবে তারা এখন দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে মুড়া তৈরী করে বিক্রি করেন। সিলেট ও ঢাকার পাইকারেরা এ মোড়া সংগ্রহ করে বিদেশে রপ্তানী করে থাকেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস